05 July 2012

হিগস-বোসন কণা মিললো আমেরিকায়!


লার্জ হেড্রন কোলাইডার নয় বরং হিগস-বোসন পার্টিকালের অস্তিত্ত্বের জোড়ালো প্রমাণ আবিষ্কারের দাবি করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জির ফার্মিল্যাব-এর বিজ্ঞানীরা। শিকাগোতে ফার্মিল্যাবের টেভাট্রন অ্যাটম স্ম্যাশার থেকে পাওয়া তথ্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে গড পার্টিকল বা হিগস-বোসন পার্টিকলের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ বলে জানিয়েছেন পদার্থবিজ্ঞানীরা। খবর এবিসি নিউজের।

২০১১ সালে টেভাট্রন অ্যাটম স্ম্যাশারটি বন্ধ করে দেয়ার পর অ্যাটম স্ম্যাশারটি থেকে পাওয়া আগের তথ্য নিয়েই গবেষণায় ব্যস্ত ছিলেন ফার্মিল্যাবের পদার্থবিজ্ঞানীরা। সেই তথ্যের মধ্যেই হিগস-বোসন পার্টিকলের অস্তিত্তে¡র প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করছেন গবেষকরা।

নিজেদের আবিষ্কারের পাশাপাশি লার্জ হেড্রন কোলাইডার থেকে সার্ন বিজ্ঞানীদের তথ্যও হিগস বোসন পার্টিকালের অস্তিত্ব প্রমাণ করবে, এমনটাই বিশ্বাস ফার্মিল্যাব বিজ্ঞানীদের।

এ ব্যাপারে ফার্মিল্যাব ফিজিসিস্ট রব রোসার বলেন, ‘হিগস বোসন পার্টিকলের অস্তিত্ত্ব যদি সত্যি হয়, তবে একাধিক পন্থায় এটি আত্মপ্রকাশ করবে। তাই আমরা এই মৌল কণাটি খুঁজে পেয়েছি বলার আগে এটির চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলো নিশ্চিত হওয়া খুবই জরুরি।

হিগস-বোসন পার্টিকলকে বিজ্ঞানীরা বলেন গড পার্টিকল। পুরো মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য এই মৌল কণাটির মধ্যে লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন পদার্থবিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত মৌল কণাটির অস্তিত্ত্বের কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ দিতে না পারলেও পদার্থবিজ্ঞানীরা এই গড পার্টিকলের খোঁজে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।

সাইবার আক্রমণ ঠেকাতে তৈরি অলিম্পিক ২০১২


সাইবার অ্যাটাক থেকে নিজেদের রক্ষা করতে রীতিমতো যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে লন্ডন অলিম্পিক গেইমস ২০১২ কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে ২ লাখ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পুরো অলিম্পিক গেইমসের ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখেছে গেইমসের সাইবার সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা টেকনোলজি কোম্পানি অ্যাটোস। খবর ইয়াহু নিউজ-এর।

২০০২ সাল থেকে অলিম্পিক গেইমসের ইন্টারনেট সিকিউরিটির দায়িত্বে আছে অ্যাটোস। পুরো ইংল্যান্ডের ১১,৫০০-এরও বেশি কম্পিউটারের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে আছে টেকনোলজি কোম্পানিটি। লন্ডন অলিম্পিক ২০১২-এর সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে যেনো যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণ কিভাবে হতে পারে এবং তা ঠেকাতে কি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে, হ্যাকারদেরও অলিম্পিক গেইমসের ইন্টারনেট সিকিউরিটি সিস্টেম হ্যাক করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো অ্যাটোস।

নিজেদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখার জন্য হ্যাকারদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা নিশ্চিত করেন অ্যাটোসের চিফ ইন্টিগ্রেটর মিশেল হায়রন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা ছাড়াও আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন সৎ এবং নীতিবান কিছু হ্যাকার। তাদের মূল কাজ হচ্ছে, সিস্টেমটির কোনো ক্ষতি না করে এটির ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা।’

এর আগে বেইজিং অলিম্পিকে প্রতিদিন ১ কোটি ২০ লাখ সাইবার অ্যাটাকের শিকার হতে হয়েছিলো অলিম্পিক কর্তৃপক্ষকে। লন্ডন অলিম্পক ২০১২-তে প্রতিদিন ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ সাইবার অ্যাটাক হবে ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে অ্যাটোস এবং অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ।

১৬ হাজার প্রসেসর দিয়ে কৃত্রিম মস্তিস্ক বানালো গুগল


১৬ হাজার প্রসেসর ব্যবহার করে গুগল এক্স এর ‘ব্লু স্কাই মিডিয়া’ ল্যাবে আর্টিফিশিয়াল ব্রেইন তৈরি করলেন জেফ ডিন-এর নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। ইউটিউবের ১ কোটি ভিডিও থেকে এলোমেলোভাবে সংগ্রহ বিভিন্ন ফটো আর্টিফিশিয়াল ব্রেইনটিতে লোড করেন সেটাকে নিজে নিজেই শিখতে শুরু করার জন্য। খবর টেকট্রির।


মজার ব্যপার হচ্ছে বিজ্ঞানীদের তৈরি মেশিনটির বেশি মনযোগ বিড়ালের প্রতি। এ ব্যাপারে ডিন বলেন, ‘আমরা মেশিনটির প্রশিক্ষণের সময় কখনোই বিড়াল চিনিয়ে দেইনি। মেশিনটি নিজেই বিড়ালকে চিনে নিয়েছে।



বিজ্ঞানীদের দলটি তাদের রিপোর্টে বলেন, ‘আমাদের এই পরীক্ষামূলক প্রজেক্টের ফলাফলে আমরা ধারণা করছি, মেশিনটির ডেটাবেজের ছবিগুলোতে কোনোকিছুকে চিহ্নিত করে দেয়া না থাকলেও এটি নিজে থেকে তা চিহ্নিত করতে পারবে। নেটওয়ার্কটিকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে যে, এটি প্রায় শতকরা প্রায় ১৫ দশমিক ৮ ভাগ নির্ভূলভাবে ২০ হাজার বস্তু আলাদাভাবে চিনতে পারে।


ইমেইল অ্যাড্রেস বদলিয়ে বিপাকে ফেইসবুক


কিছুদিন আগেই বিনা নোটিশে ইমেইল অ্যড্রেস বদলে দিয়ে ব্যবহারকারীদের রোষের মুখে পড়েছিলো ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ। সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিপাকে পড়েছে এই সোশাল নেটওয়ার্কিং জায়ান্ট। স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থেকে ফেইসবুক অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করেন, এমন অনেক ব্যবহারকারীর কেবল ফেইসবুক অ্যাকাউন্টের ইমেইল অ্যাড্রেসটিই নয়, বরং ইমেইল কন্ট্যাক্ট লিস্টের সবগুলো ইমেইল ঠিকানাও বদলে সেখানে ফেইসবুকের ডোমেইন বসিয়ে দিয়েছে। খবর বিবিসির।

জানা গেছে, ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের পুরো ইমেইল কন্টাক্ট লিস্ট বদলে যাওয়ার কারণ হচ্ছে, একটি সফটওয়্যার ত্রুটি বা ‘বাগ’। একসঙ্গে সব ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ইমেইল অ্যাড্রেস বদলে দেয়ার জন্যে সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছিলো।

ফেইসবুকের এই সফটওয়্যার বাগ-এর কারণে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ব্ল্যাকবেরি, অ্যান্ড্রয়েড, অ্যাপলের আইওএস সিক্স এবং উইন্ডোজ ফোন এইট অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীরা।

এদিকে এই সফটওয়্যার বাগটির কারণে ইউজারদের রোশের মুখে পড়েছে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ। সফটওয়্যার বাগটি অপসারণের জন্য লেগে আছেন ফেইসবুকের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা। খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ মিললো অটিজম ও ক্যান্সারের জিনের


শিশুদের ক্যান্সার, অটিজম, এনলার্জড ব্রেইন এবং এপিলেপ্সি (মৃগী)র মতো রোগের জন্য দায়ী জিন শনাক্ত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। টানা দুই দশকের গবেষণার পর এই আবিষ্কার করেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। খবর সায়েন্স ডেইলির।

বিজ্ঞানীরা জানান, ‘একেটিথ্রি, পিআইকেথ্রিআরটু এবং পিআইকেথ্রিসিএ’ এই তিনটি জিনের বিবর্তনের কারণে ক্যান্সার, অটিজম, এপিলেপ্সি এবং মেগালেনসিফালি বা এনলার্জড ব্রেইন সাইজের শিকার হচ্ছে শিশুরা। সব মানুষের শরীরেই রয়েছে এই তিনটি জিনের উপস্থিতি। কিন্তু যাদের শরীরে এই জিনটি রূপান্তরিত হচ্ছে, তারাই আক্রান্ত হচ্ছে ওই রোগগুলোতে। এর আগে পিআইকেথ্রিসিএ জিনটির ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা নিশ্চিত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।

সিয়াটল চিলড্রেনস রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর ক্যান্সার স্পেশালিস্ট ডক্টর জেমস ওলসন এ ব্যাপারে বলেন, ‘টানা দুই দশকের গবেষণার ফসল এই আবিষ্কার। এর ফলে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হবে।’

শিশুদের দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল রোগ নিয়ে রহস্যের সমাধানে বড় একটি অগ্রগতি হিসেবে বিজ্ঞানীরা বিবেচনা করছেন এই আবিষ্কারকে। ‘বাচ্চাদের ব্রেইন ম্যালফাংশনের মতো কঠিন সমস্যাগুলোর পেছনের অনেক কারণই বোধগম্য হচ্ছে এই আবিষ্কারের ফলে।’

অটিস্টিক শিশুদের বন্ধু হবে রোবট 'পপচিলা'


সন্তানের শিক্ষার জন্য সবসময়ই সবচেয়ে ভালো উপায়ই খোঁজেন বাবা-মা। তবে ভালোবাসার সন্তানটি যতি অটিস্টিক বা স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের শিকার হয় তবে সাধারণ শিক্ষা একরকম অসম্ভবই হয়ে পড়ে। এ জন্যেই খেলায় খেলায় অটিস্টিক শিশুদের শেখাতে ইন্টারবট তৈরি করেছে নতুন রোবট ‘পপচিলা’। খবর রয়টার্স-এর।

নতুন এই খেলনা রোবটটি নিয়ে বেশ খুশি ইন্টারবট সিইও সিমা প্যাটেল। তিনি জানিয়েছেন রবোটটিকে চালাবে পপচিলা’স ওয়ার্ল্ড নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন। আর মোবাইল ফোনেও চালানো যাবে এই অ্যাপ্লিকেশনটি।

দেখতে চিনচিলা বা দক্ষিণ আমেরিকান কাঠবেড়ালির সঙ্গে কিছু মিল আছে পপচিলার। বেশ ঘুরে ফিরে বেড়াতেও পারে পপচিলা। এমনকি বাচ্চাদের সঙ্গে খেলার সময় মজার কিছু মুখভঙ্গীও করতে পারবে এই রোবটটি। আর এটির অপারেটিং অ্যাপ্লিকেশনটিও খেলার ছলে বাচ্চাদের শেখাবে অনেক কিছু।

এখনো পপচিলার কার্যক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রদর্শনীর আয়োজন না করলেও, কার্নেগি মেলোন ইউনিভার্সিটি গত ৬ মাস ধরে পপচিলা রোবটটি তাদের গবেষণার কাজে ব্যবহার করছে বলেই জানিয়েছেন প্যাটেল। অটিস্টিক শিশুদের যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে পপচিলা সহযোগিতা করবে বলে আশা করছেন তিনি।

ইইজির মাধ্যমে নির্ধারণ করা যাবে অটিজম


আমেরিকার বস্টন চিলড্রেন হসপিটালের গবেষকরা ইইজি-এর মাধ্যমে দুই বছরের শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ মাপতে সক্ষম হয়েছেন। প্রায় ১ হাজার শিশুর ওপর সমীক্ষার পর গবেষকরা কোনো শিশু অটিস্টিক কিনা তা প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করতে পেরেছেন। খবর বিবিসি নিউজ-এর।

অটিজম এমন একটি রোগ, যেখানে শিশুর মানসিক বিকাশ পরিপূর্ণভাবে হয় না। এ ধরনের শিশুরা প্রায়শই সামাজিকভাবে মিশতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে তারা তাদের নিজস্ব জগতেই বন্দী থাকে।

সাধারণত অটিজম সহজে নির্ণয় করা যায় না। ইইজি-এর মাধ্যমে ৩৩ ধরনের অটিজম নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। গবেষকরা ১০ বার এ পরীক্ষার পর সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, ইইজির মাধ্যমে নির্ধারিত অটিজম শতকরা ৯০ ভাগ সঠিক।

গবেষকদের দলটির প্রধান ড. ফ্র্যাঙ্ক ডাফি বলেন, ‘অ্যাসপারগারস সিনড্রম অটিসমের একটি সম্পূর্ণ আলাদা পরিস্থিতি। ইইজির মাধ্যমে অটিজম নির্ণয় করা সম্ভব।’

ন্যশনাল অটিস্টিক সোসাইটির ক্যারলাইন হটারসলে বলেন, ‘এ গবেষণাটি আমাদেরকে আরও ভালোভাবে অটিজম বুঝতে সাহায্য করবে।’

আসছে ব্ল্যাকবেরি ট্যাবলেট


ব্ল্যাকবেরি প্রস্তুতকারক রিম আগামী বছরের শরৎকালে ব্ল্যাক ফরেস্ট নামে একটি নতুন ট্যাবলেট পিসি আনার পরিকল্পনা করেছে। একটি গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এই খবরটি জানা গেছে। খবর টেলিগ্রাফ নিউজ–এর।

ব্ল্যাকবেরি ব্লগে প্রকাশ করা একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, এসবই রিমের ক্লাসিফায়েড তথ্য যা থেকে ব্ল্যাকবেরির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

ব্ল্যাকবেরির ফাঁস হওয়া ‘রোডম্যাপ’ থেকে জানা গেছে, ব্ল্যাকবেরি ফোরজি প্লেবুক যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে তৈরি হচ্ছে, সেটি আসবে ২০১২ সালের শেষ দিকে এবং নতুন ব্ল্যাকবেরি ১০ ডিভাইসটি আসবে ২০১৩ সালের শুরুতে।

ব্ল্যাকবেরি ১০ ডিভাইসটি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্লগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রায় সব প্রযুক্তি ব্লগ সাইটেই বলা হচ্ছে, এতে ১০ ইঞ্চি স্ক্রিন থাকবে যা প্লেবুকের স্ক্রিনের তুলনায় বড় এবং এতে ১২৮জিবি মেমোরি থাকবে। তাদের ‘রোডম্যাপ’ থেকে আরো দু’টি নতুন প্রোডাক্ট-এর নাম জানা গেছে। প্রোডাক্ট দু’টির কোডনেম ‘ন্যাশভিল’ এবং ‘নেপলস’।

এদিকে গত সপ্তাহে রিম ঘোষণা করেছে, তারা ব্ল্যাকবেরি ১০ আরো দেরিতে রিলিজ করবে। এর ফলে ব্ল্যাকবেরির শেয়ার মূল্য ২০% কমে গেছে। এই সম্পর্কে স্ক্রিন ডাইজেস্ট-এর সিনিয়র প্রিন্সিপাল বলেছেন, ‘আগামী প্রজন্মের পণ্যের মাধ্যমে, রিমের এখন একটি বড় সাফল্য প্রয়োজন। তার বদলে তারা দেরি করে নিজেদেরই ক্ষতি করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাজার রিমের প্রতি ক্রমশ আস্থা হারাচ্ছে’।

অ্যান্ড্রয়েড থেকেও উঠে যাচ্ছে ফ্ল্যাশ


অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ প্লেয়ার ব্রাউজার প্লাগইন সাপোর্ট করবে না গুগলের নতুন অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ডয়েড ৪.১ জেলি বিন। ফ্ল্যাশের বদলে এইচটিএমএল৫-ই হবে স্মার্টফোন ব্রাউজারের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টগুলোর ভবিষ্যত। স¤প্রতি এক অফিসিয়াল ব্লগ বার্তায় এ খবর জানিয়েছে অ্যাডোবি কর্তৃপক্ষ। খবর ম্যাশেবল-এর।

অ্যাডোবি তাদের অফিসিয়াল ব্লগে জানায়, অ্যান্ড্রয়েড ৪.১ জেলি বিন অপারেটিং সিস্টেমটি অ্যাডোবি ফ্লাশ প্লেয়ার সাপোর্ট করবে না। শুধু তাই নয়, স্মার্টফোনগুলোর অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৪.১-এ আপগ্রেড করা হলে ফ্ল্যাশ প্লেয়ারটি আনইনস্টল করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ফ্ল্যাশ প্লেয়ারের ওপর নির্ভরতার দিন যে ফুরিয়ে এসেছে তা প্রথম ২০১০ সালে এক খোলা চিঠিতে জানিয়েছিলেন অ্যাপল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। ‘থটস অন ফ্ল্যাশ’ শিরোনামে ওই চিঠিতে সে সময় জবস জানিয়েছিলেন, অ্যাপল আইফোন আইপ্যাড বা আইপড টাচ-এর কোনোটিই ফ্ল্যাশ প্লেয়ার সাপোর্ট করবে না। 

স্টিভ জবস সে সময় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ফ্ল্যাশের দিন ফুরিয়ে আসছে। প্রায় একই মন্তব্য তিনি করেছিলেন ডি এইট কনফারেন্সে। স্টিভ জবসের ওই ভবিষ্যতবাণীকে সে সময় অনেকেই অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছিলেন। তবে, শেষ পর্যন্ত সম্ভবত তার কথাই সত্যি হচ্ছে।

২০১১ সালের নভেম্বর মাসেই অ্যাডোবি মোবাইল ব্রাউজারের জন্য ফ্ল্যাশ প্লেয়ারের ডেভেলপমেন্ট বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলো। আর এ বছরের ১৫ অগাস্ট-এর পর থেকে গুগলের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন স্টোর গুগল প্লে-র ফ্ল্যাশ প্লেয়ার আপডেটগুলোও বন্ধ করে দেবে অ্যাডোবি।

৫ম জন্মদিনে অ্যাপল আইফোন


টেক বোদ্ধাদের মতে, একুশ শতকের সবচেয়ে জনপ্রিয় কনজিউমার ইলেকট্রনিক পণ্য অ্যাপল আইফোন। শুরুতে একটি অভিজাত পণ্য হিসেবে বাজারে এলেও ধীরে ধীরে সবধরণের পেশাজীবী মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই স্মার্টফোনটি। প্রয়াত টেক গুরু স্টিভ জবসের তত্ত্বাবধানে অ্যাপলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনি আইভ-এর ডিজাইন করা এই স্মার্টফোনটি গত ৫ বছরে পাল্টে দিয়েছে হ্যান্ডহেল্ড ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের চিত্র; শুরু করেছে নতুন এক টেকনোলজি বিপ্লবের।

২০০৭ সালের ২৮ জুন পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন নির্মাতার স্থানটি দখলে ছিলো নোকিয়ার। আর কর্পোরেট অফিসারদের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের জায়গা করে নিয়েছিলো ব্ল্যাকবেরি। কিন্তু এ সবই পাল্টে যায় ২০০৭ সালের ৩০ জুন অ্যাপল আইফোন বাজারে আসার পর। ৬০০ ডলার দামের আইফোনটি তখন অনেকের কাছেই মনে হয়েছে ধনীদের জন্য তৈরি একটি মোবাইল ফোন মাত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভুল প্রমাণিত হয়েছে এই ধারণা। এখনও বিশ্বব্যাপী ২০ কোটিরও বেশি মানুষ ব্যবহার করছেন আইফোন। কনস্ট্রাকশন সাইটে ইঞ্জিনিয়াররা ব্লু-প্রিন্টে নজর রাখতে ব্যবহার করছেন আইফোন, রোগীদের চিকিৎসায় হাসপিটালে চিকিৎসকদের সঙ্গী হচ্ছে আইফোন, এমনটি বাচ্চাদের মধ্যেও জনপ্রিয় আইফোন। আইফোন বর্তমান হ্যান্ডহেল্ড গ্যাজেট টেকনোলজিকে এতোভাবে বদলে দিয়েছে যা হয়তো শতাব্দীতে একবারই ঘটে।
টাচ স্ক্রিন বিপ্লব
আইফোনের আগেও বাজারে টাচস্ক্রিন ছিলো, কিন্তু টাচ স্ক্রিন বিপ্লব সম্পন্ন করেছে অ্যাপল এই আইফোন দিয়েই। ২০০৭ সালের আগে নিউম্যারিকাল ফুল সাইজ কিবোর্ডে টেক্সট টাইপ করতে করতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তেন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। কিন্তু অ্যাপল নিউম্যারিকাল কিবোর্ড এড়িয়ে বেছে নেয় ফুল টাচ স্ক্রিন কিবোর্ড। রাতারাতি ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের মনও জয় করে নেয় অ্যাপলের এই সিম্পল ইউজেবিলিটি। আইফোনের প্রথম মডেলটি নিয়ে টেক বোদ্ধাদের একমাত্র আপত্তিটিও ছিলো এই টাচ স্ক্রিন নিয়ে। ব্ল্যাকবেরির মতো দ্রুত গতিতে আইফোনে টাইপ করা না যাওয়ায় এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বাজারে আসার ৩ মাসের মধ্যেই ১০ লাখের বেশি আইফোন বিক্রি করে টেক বোদ্ধাদের ওই শঙ্কা মিথ্যে প্রমাণ করে অ্যাপল।

এরপর স্পেল চেক সফটওয়্যার, টেক্সট প্রেডিক্টিভ সফটও্যার আর কাট-পেস্ট অপশন দিয়ে হাই স্পিড কিবোর্ডের অভাব মিটিয়েছে আইফোন। আর এখন সিরি ভয়েস অ্যাসিসটেন্ট ফিচারের বদৌলতে ব্যবহারকারীর ভয়েস কমান্ড থেকেই টেক্সট টাইপ করে নিচ্ছে স্মার্টফোনটি। অ্যাপল আইফোন টাচ স্ক্রিনের এই সাফল্যই মূল শক্তি জোগায় টাচ স্ক্রিন মোবাইল ফোন যুগের।
আইওএস ও অ্যাপ স্টোর
টাচ স্ক্রিন মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্যবহারকারীদের কাছে অনেক সহজ করে দিলেও আইফোনের বিশ্বব্যাপী সাফল্যেও মূল রহস্য এটির আইওএস অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর। আইওএস-এর সহজবোধ্যতা আর কম্পিউটিং ক্ষমতা রাতারাতি পার্সোনাল কম্পিউটারের সুযোগ সুবিধা এন দেয় ব্যবহারকারীর হাতের মুঠোয়। আর অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারকারীদের সুযোগ করে দিয়েছে নিজের প্রয়োজনমতো অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে ব্যবহার করার।

২০০৮ সালে লঞ্চ করার পর থেকে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর আইফোন ব্যবহারকারীদের কাছে একরকম অ্যাপ্লিকেশন স্বর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব ধরনের ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের কথা মাথা রেখেই অ্যাপ স্টোরটি তৈরি করে অ্যাপল। দৈনন্দিন জীবনে থেকে শুরু করে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার করার মতো অ্যাপ্লিকেশনও রয়েছে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে। অ্যাপ স্টোরের এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে যেমন সূর্য পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব, তেমনি সম্ভব রেস্টুরেন্টের রিজার্ভেসনও। শুধু তাই নয়, এই স্টোরটিতে রয়েছে শপিং লিস্ট সিনক্রোনাইজ করার মতো অ্যাপ্লিকেশন, ক্যাশ রেজিস্টার, মিউজিশিয়ানদের জন্য রয়েছে ড্রাম মেশিনের মতো অ্যাপ্লিকেশন। এমনকি পোষা কুকুর-বেড়ালের জন্যেও রয়েছে পেট ফ্রেন্ডলি অ্যাপ্লিকেশন। বর্তমানে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে রয়েছে সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি অ্যাপ্লিকেশন, যা মধ্যে রয়েছে একদম ফ্রি থেকে শুরু করে ১০০০ ডলারের স্পেশালাইজড বিজনেস অ্যাপ্লিকেশন।
মোশন ও অরিয়েন্টেশেন সেন্সর
আইফোনের সাফল্যের আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, এর মোশন এবং অরিয়েন্টেশেন সেন্সরগুলো। আইফোনের বর্তমান মডেলটিতে রয়েছে অ্যাক্সেলোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং কম্পাস। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা আইফোনের গেইমস আর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর চোখ ধাঁধানো ইফেক্ট তৈরি করতে নির্ভর করেন এই সেন্সরগুলোর ওপর।
পিসি বনাম ম্যাক যুদ্ধে আইফোনের জয়
মাইক্রোসফট পিসি বনাম অ্যাপল ম্যাকিন্টোশ-এর লড়াই চলে আসছে সেই ৮০র দশক থেকে। পিসি ব্যবহারকারীদের অনেকদির ধরেই ম্যাক-এর জগতে টেনে আনার চেষ্টা করে আসছিলো অ্যাপল। পিসি বনাম ম্যাক লড়াই এখনও শেষ না হলেও আইফোন আর আইপ্যাড-এর কারণে অনেকটাই এগিয়ে গেছে অ্যাপল। পিসি ব্যবহারকারীরা সাধারণত অ্যাপলের পণ্যগুলো থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই চলতেন। কিন্তু আইফোন বাজারে আসার পর এই স্মার্টফোনটি দিয়েই গত ৫ বছরে অ্যাপল এর জগতে অভিষেক হয়েছে অনেক পিসি ব্যবহারকারীর। অ্যাপল আইফোনের অপারেটিং সিস্টেমের সহজবোধ্যতা, সিম্পল ইউজেবিলিটি আর অ্যাপ স্টোরের কয়েক লাখ ইউজার ফ্্েরন্ডলি অ্যাপ্লিকেশনের প্রেমে পড়ে পিসি ছেড়ে অ্যাপল ভক্তের খাতায় নাম লিখিয়েছেন অগণিত পিসি ব্যবহারকারী।

আইফোন পাল্টে দিয়েছে মোবাইল গেইমিং দুনিয়া
২০০৮ সালে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর লঞ্চ হবার আগ পর্যন্ত মোবাইল গেইমিং মানেই ছিলো নিনটেনডো বা সনির পকেট গেইমিং সিস্টেম। শেষ হয়ে এসছে স্ট্যান্ড অ্যালোন মোবাইল গেইমিং ডিভাইসের যুগ। এক অ্যাপল আইফোনের কাঁধে ভর করেই মোবাইল গেইমিং ইন্ডাস্ট্রি পৌঁছে গেছে সাফল্যের নতুন এক চূড়ায়। অ্যাপলের আগে ২০০৩ সালে নোকিয়া সেল ফোন আর মোবাইল গেইমিং ডিভাইসের সংমিশ্রনে তৈরি করেছিলো এন-গেজ গ্যাজেট। সে সময় অনেক টেক বোদ্ধা মোবাইল গেইমিং প্লাটফর্ম প্লাস সেল ফোন ডিভাইসের যুগ শুরু হচ্ছে বললেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো গেইমাররা। কিন্তু সেটা পুরনো কথা, শুধু দৈনন্দিন জীবন বা পেশাগত কাজে ব্যবহার করার জন্য নয়, বরং গেইমিং ডিভাইস হিসেবেও পুরো বিশ্বের গেইমারদের মন জয় করে নিয়েছে আইফোন। গত ৫ বছরে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে মোবাইল গেইমিংয়ের সংজ্ঞা।
মোবাইল টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রির নতুন যুগ
এমনটা বলাই যায় যে, মোবাইল টেকনোলজির ইতিহাসে ব্ল্যাকবেরি অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছে আইফোন। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে আইফোনের অবদানেই শুরু হয়েছে মোবাইল টেকনোলজি ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়। পুরো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিই বদলে দিয়েছে অ্যাপলের আইফোন। পৃথিবীর সব বড় মোবাইল ফোন নির্মাতাই এখন অনুসরণ করার চেষ্টা করছে অ্যাপল আইফোনের দেখানো পথ। তারপরও আইফোন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে কোম্পানিগুলো। আইফোনের অনুকরণেই গুগল তৈরি করছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। শেষ পর্যন্ত চির প্রতিদ্ব›দ্বী মাইক্রোসফটও আইফোনের কাছে হার মেনে নিয়েছে উইন্ডোজ ৮ ওএস দিয়ে। এক কথায় বলতে গেলে বিশ্বব্যাপী ইউজার ফ্রেন্ডলি মোবাইল ফোন তৈরির মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাপল আইফোন।

অনেক টেক বোদ্ধার মতে, আইফোন আর আইপড টাচই হচ্ছে অ্যাপল আইপ্যাড-এর পেছনের মূল অনুপ্রেরণা। টেক বোদ্ধাদের এই বক্তব্য কতোটা নির্ভরযোগ্য এমন প্রশ্ন করেন অনেকেই। কিন্তু আইপ্যাডের পেছনের মূল অনুপ্রেরণা আইফোন হোক বা না হোক মজার ব্যপার হচ্ছে আইফোনের পর এখন ট্যাবলেট পিসির বাজার দখলে আইপ্যাডের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে অ্যামাজন, মাইক্রোসফট এবং গুগলের মতো কোম্পানিকে।

৩০ জুন ষষ্ঠ বছরে পা দিলো অ্যাপল আইফোন। গত ৫ বছরে আইফোন শুধু মোবাইল টেকনোলজির জগতটি পুরোপুরি পাল্টেই দেয়নি বরং জন্ম দিয়েছে নতুন এক অধ্যায়ের; অ্যাপল ভক্তদের কাছে যা আইফোন কালচার নামে পরিচিত।